বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০২:২৩ অপরাহ্ন
অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত বাফলা বিল
সামসুজ্জামান,উপদেষ্টা,আজকের কিশোরগঞ্জ ২৪ :
ঝাঁকেঝাঁকে উড়ে এসে পড়ছে বিলে হাজার হাজার অতিথি পাখি। দেখে মনে হয় পাখিদের মেলা। খাবারের সন্ধানে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে আসা এসব অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিলের চারপাশ। বলছি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রনচন্ডী ইউনিয়নের বাফলা বিলের কথা।
সবুজ শ্যামলে জীববৈচিত্রে ভরা বিশাল জলাধার বাফলার বিলে প্রতি বছরের মত এবারও শীতের আগমনে হাজার হাজার বালিহাঁস,পাতিসরালিসহ নানা জাতের পরিযায়ী জলচর পাখির মেলা বসেছে। দলবেঁধে আসা এসব পাখিডানার শব্দ আর কলতানে ভোরে ঘুমভাঙে স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অতিথেয়তার ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি মেলবন্ধন যেন এক অঘোষিত পাখির অভয়াশ্রম। নয়নাভিরাম এ জলাশয়ে হাজারও শাপলা ও সাদা পদ্ম ফুল ফুটে স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে আছে।
স্থানীয়রা জানান, পাখিগুলো শীত প্রধান দেশে টিকতে না পেরে প্রতি বছর শীতে অতিথি হিসেবে এখানে আশ্রয় নেয়। এরপর বসন্তে উত্তরে উড়াল দেয়। এমন নিরাপদ আবাসস্থলে পানকৌড়ি, চাপাখি, টুনটুনি, বেনেবউ, হাঁড়িচাচা, দোয়েল, শালিক, রাতচরা, কানাবক, সাদাবক, ধূসরবক, মাছরাঙ্গাসহ নাম না জানা অনেক পাখির আনা গোনা চলে নিত্যদিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শতাধিক একরের সরকারি খাসভুক্ত জলায়তন বিলের একাংশ দখলমুক্ত ও খনন করে তোলা হয়েছে মৎস্য অভয়ারণ্য। তাছাড়া মৎস্যজীবীরা বিশাল এলাকাজুড়ে মাছ রক্ষায় এর চারপাশ বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে নিরাপদ বেষ্টনি গড়ে তুলেছেন।
এমন নিরাপদ বেষ্টুনির আবাসস্থলে বালিহাঁস, সরালির মত হাজার হাজার অতিথি পাখি জলকেলিতে মেতে উঠে। তাদের ছোটাছুটি আর লুটোপুটি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। গোধুলির রঙ ডানায় মেখে পাখিগুলো যার যার মত আশ্রয় নেয় আশপাশের গাছগাছালি, বাঁশঝাড় ও কুচুরিপানায়।
বিল পাড়ের বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, এলাকার মানুষ পাখির প্রতি একদম সদয়। এখানে কাউকে পাখি শিকার করতে দেওয়া হয় না। তাই পাখি শিকার করতে এখানে আর কেউ আসে না।
তবে পাখি নিরাপত্তায় জনসচেতনাতা সৃষ্টি করে, পাখি শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, পাখি শিকার করলে জেল-জরিমানা করা হবে প্রচারসহ বিল এলাকা সরকারিভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে শীত মৌসুমে পাখির ভিড় আরো বাড়বে বলে মনে করে তিনি। এছাড়া এলাকাটি একটি সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্রস্থল হতে পারে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী হক বলেন, একসঙ্গে এতো পাখির আনাগোনা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। পাখিগুলো প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দের বিনোদনের খোরাক জোগানোর ও পুরো এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। বিশেষ করে এ বিলে পাখিদের অন্যতম নিরাপদ আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে।